তুলসী, “ঔষধি গাছের রানী”, শুধু একটি উদ্ভিদ নয়, এটি ভারতীয় সংস্কৃতিতে একটি পবিত্র স্থান অধিকার করে আছে। হিন্দুধর্মে, তুলসী গাছকে দেবী লক্ষ্মীর প্রতিরূপ হিসাবে পূজা করা হয়। মনে করা হয়, তুলসী গাছ গৃহে শান্তি ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসে। তুলসী পাতার ঔষধি গুণাবলীর কথা আমরা সকলেই জানি, কিন্তু তুলসী কাঠের মালারও যে অনেক উপকারিতা রয়েছে, তা হয়তো অনেকেরই অজানা।
-
তুলসী মালার প্রকারভেদ: সাধারণত দুই প্রকারের তুলসী মালা পাওয়া যায় – রাম তুলসী এবং শ্যাম তুলসীর মালা। উভয় মালাই অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
-
তুলসী মালার উপকারিতা:
- শাস্ত্র মতে, তুলসী মালা ধারণ করলে বুধ ও শুক্র গ্রহের দুর্বলতা দূর হয়।
- এটি মনে শান্তি এনে মানসিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- তুলসী মালা ধারণ করলে লক্ষ্মী, নারায়ণ ও কৃষ্ণের বিশেষ আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
- এটি শরীর থেকে নেতিবাচক শক্তি দূর করে ইতিবাচক শক্তি বৃদ্ধি করে।
-
শারীরিক উপকারিতা ছাড়াও, তুলসী মালা আমাদের মন ও আত্মার উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি মনে শান্তি এনে একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে। তুলসী মালা ধারণ করলে, ব্যক্তি সকল প্রকার ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে পারে বলে বিশ্বাস করা হয়।
-
তুলসী মালা পরার নিয়ম:
- যারা তুলসীর মালা পরেন, তাদের সাত্ত্বিক খাবার খাওয়া উচিত। মাংস, অ্যালকোহল, রসুন, পিঁয়াজ ইত্যাদি ত্যাগ করা উচিত।
- এই মালা পরার পর তা খুলে ফেলা উচিত নয়।
- তুলসীর মালা পরার আগে গঙ্গা জল দিয়ে ধুয়ে নিন। শুকিয়ে গেলে তবেই পরুন।
- যে তুলসী মালা গলায় পরবেন, তা দিয়ে জপ করা উচিত নয়। জপের জন্য আলাদা মালা ব্যবহার করুন।
- গলায় পরতে অসুবিধা হলে, ডান হাতেও এই মালা পরতে পারেন।
-
আসল তুলসী মালা চেনার উপায়:
- একটি পাত্রে জল ভরে তুলসী মালা ডুবিয়ে রাখুন। ২০-২৫ মিনিট পর যদি মালার রঙ ছেড়ে দেয়, তাহলে বুঝবেন সেটি নকল। আসল তুলসী মালা রঙ ছাড়ে না।
- আসল তুলসীর মালা মসৃণ হয় না।
তুলসী মালা শুধু একটি অলঙ্কার নয়, এটি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার প্রতীক। এই মালা ধারণ করে, আমরা নিজেদেরকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করি এবং জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি লাভ করি।