🔱 ভগবান হনুমানের মহাকাব্য: ভক্তি ও শক্তির এক চিরন্তন কাহিনি 🔱

ভগবান হনুমান ভারতীয় পুরাণের অন্যতম শ্রদ্ধেয় চরিত্র। তিনি ভক্তি, শক্তি ও আত্মসমর্পণের প্রতীক। তাঁর কাহিনি শুধু রামায়ণ পর্যন্ত সীমাবদ্ধ নয়, বরং যুগে যুগে কোটি কোটি ভক্তদের প্রেরণা দিয়ে চলেছে। তাঁর নাম স্মরণ করলে ভয় দূর হয়, মনোবল বৃদ্ধি পায়, এবং আত্মশক্তির জাগরণ ঘটে।

🔹 হনুমানের জন্ম ও অলৌকিক শক্তি

হনুমানজি পবনদেব ও অঞ্জনা দেবীর পুত্র। জন্মের সময় থেকেই তিনি অসীম শক্তিধর ছিলেন। শৈশবে সূর্যকে পাকা ফল ভেবে গিলে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন, যার ফলে ইন্দ্রের বজ্রাঘাতে তিনি আহত হন। তখন পবনদেব রুষ্ট হয়ে বায়ুপ্রবাহ বন্ধ করে দেন, ফলে সমগ্র বিশ্ব বিপদের সম্মুখীন হয়। পরে দেবতারা তাঁকে নানা বর দান করেন – যেগুলোর মধ্যে ছিল অমরত্ব, অপরিসীম শক্তি ও আকৃতি পরিবর্তনের ক্ষমতা।

🔹 শ্রীরামের প্রতি অনন্য ভক্তি

ভগবান হনুমানের জীবনের মূল উদ্দেশ্য ছিল শ্রীরামের সেবা। যখন রাবণ সীতামাতাকে অপহরণ করে লঙ্কায় নিয়ে যায়, তখন হনুমানই তাঁকে প্রথম খুঁজে পান এবং রামের বার্তা পৌঁছে দেন। এরপর তিনি লঙ্কার রাজপ্রাসাদে আগুন ধরিয়ে দেন এবং ভয়ংকর শক্তির প্রকাশ ঘটান।

একবার হনুমানের ভক্তি পরীক্ষা নিতে শ্রীরামের নাম লেখা একটি আংটি সমুদ্রে ফেলে দেওয়া হয়। হনুমান তা খুঁজতে গিয়ে দেখেন, সমুদ্রের তলদেশে লক্ষ লক্ষ আংটি পড়ে আছে! তখন তিনি বুঝতে পারেন যে যুগে যুগে তিনি শ্রীরামের সেবায় থাকবেন এবং তাঁর নাম অমর থাকবে।

🔹 হনুমানের শক্তি ও অসাধারণ কীর্তি

হনুমানজির অসংখ্য অসাধারণ কীর্তির মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য—

✅ লঙ্কাদহন: রাবণের সেনারা তাঁকে বন্দি করলে, হনুমান তাঁর লেজে আগুন লাগিয়ে সমগ্র লঙ্কায় আগুন ধরিয়ে দেন।
✅ সঞ্জীবনী বুটির সন্ধান: লক্ষ্মণ মূর্ছিত হলে, হনুমান হিমালয়ে গিয়ে সম্পূর্ণ পর্বতই তুলে নিয়ে আসেন।
✅ অজেয় ও অমরত্ব: তাঁকে কখনো হত্যা করা সম্ভব নয়। তিনি চিরজীবী, এবং কলিযুগেও তাঁর অস্তিত্ব বর্তমান।

🔹 হনুমান উপাসনার মাহাত্ম্য

হনুমানজিকে রোজ স্মরণ করলে—
🔸 ভয় দূর হয়
🔸 মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায়
🔸 শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা দূর হয়
🔸 নেগেটিভ এনার্জি দূরে থাকে

🔹 উপসংহার

ভগবান হনুমান শুধু শক্তির দেবতা নন, তিনি চিরন্তন ভক্তির প্রতীক। তাঁর নাম জপ করলে সাহস ও আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। তাই আজও লক্ষ লক্ষ ভক্ত হনুমান চালিসা পাঠ করে এবং তাঁর কৃপা লাভ করে।

🔗 সম্পর্কিত পড়ুন:
✅ হনুমান চালিসার মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব

পুরাণ ও কাহিনি